”ভুল বানান পায় না কখনো মান।” প্রবোধ চন্দ্র সেন ধ্বনি ,বর্ণ ,পদ,বাক্য ইত্যাদির সঙ্গা ও তার বৈশিষ্ট এবং বিচিত্র প্রয়োগ পদ্ধতি আমরা ইতিমধ্যে জেনে গেছি। কিন্তু ঐ সমস্ত নিয়মকানুন কেবলমাত্র জানলেই হবে না ,সেই জানা শুদ্ধ ভাবে প্রকাশ করতে না পারলে তো সবই বৃথা হয়ে যাবে। কিন্তু বর্ণের যথাযথ জ্ঞ্যান ,পদের সঠিক ব্যবহার এবং বাক্যের প্রয়োগ বৈশিষ্ট জানা থাকলে বর্ণ -পদ -বাক্য ব্যবহারের অশুদ্ধতা অনেকটাই এড়ানো যায় যে কোনো রচনার প্রধান গুনই হলো নির্ভুল ভাবে লেখা সুতরাং সেই ব্যাপারে আমাদের সবসময় সচেতন থাকতে হবে।
লেখার ভাষায় সাধারণত তিন রকমের অশুদ্ধি দেখা যায়। যথা –
ক) বর্ণগত অশুদ্ধি ,
খ) পদগঠন গত অশুদ্ধি এবং
গ) বাক্যগত অশুদ্ধি ।
ক) বর্ণগত অশুদ্ধি :- প্রথমে আমরা বর্ণগত অশুদ্ধি গুলি দেখবো। বর্ণগত অশুদ্ধ বলতে সাধারণত বানান ভুলকে বাঝায়। শব্দের বানান শেখাযায় শব্দটিকে দেখে এবং শব্দ টিকে বার বার লিখে দেখা ও লেখায় বানান শেখার মূল উপায়। একথা সত্যি বাংলায় বানান একটা সমস্যা।
অশুদ্ধ শব্দ |
শুদ্ধ শব্দ |
শারিরিক |
শারীরিক |
বিকীরণ |
বিকিরণ |
কালীদাস |
কালিদাস |
দূর্গা |
দুর্গা |
ভৌগলিক |
ভৌগোলিক |
প্রৌড় |
প্রৌঢ় |
আছার |
আছাড় |
খমা |
ক্ষমা |
আকাঙ্খা |
আকাঙ্ক্ষা |
মধ্যাহ্ণ |
মধ্যাহ্ন |
কল্যান |
কল্যাণ |
পুরষ্কার |
পুরস্কার |
দুর্বিসহ |
দুর্বিষহ |
ব্যায় |
ব্যয় |
উজ্জল |
উজ্জ্বল |
উর্ধ |
ঊর্ধ্ব |
গৃহস্ত |
গৃহস্থ |
লক্ষী |
লক্ষ্মী |
দুরাবস্থা |
দুরবস্থা |
সম্বাদ |
সংবাদ |
খ)পদগঠন গত অশুদ্ধি : –
অশুদ্ধ শব্দ |
শুদ্ধ শব্দ |
ইতিমধ্যে |
ইতোমধ্যে |
নির্দোষী |
নির্দোষ |
অহোরাত্রি |
অহোরাত্র |
পথমধ্যে |
পথিমধ্যে |
সিঞ্চন |
সেচন |
দোষণীয় |
দূষণীয় |
পরিত্যজ্য |
পরিত্যাজ্য |
মৈত্রতা |
মিত্রতা |
প্রফুল্লিত |
প্রফুল্ল |
ধূলিস্যাৎ |
ধূলিসাৎ |
সেবকি |
সেবিকা |
বিহঙ্গিনী |
বিহঙ্গী |
নিরপরাধিনী |
নিরপরাধা |
গ) বাক্যগত অশুদ্ধি :- বানান ভুল ,পদগত অশুদ্ধি ছাড়াও বাক্য গঠনের ক্ষেত্রেও আমাদের নানা প্রকার ভুল হয়ে যায়। এই ব্যাপারেও খুব সতর্ক থাকা প্রয়োজন। যেমন-
১.) বাক্যের মূল সতর্ক গুলি হলো -ক) যোগ্যতা ,খ)আকাঙ্খা ,গ) আসক্তি অবশ্যই পূর্ণ হাওয়া চাই।
২.) বাক্যের মধ্যে পদের রূপ নির্ভুল হাওয়া চাই।
৩.) পদ বিন্যাস ভুল হলে বাক্য গঠনে ভুল থেকে যায়।
৪.) বিশেষ্য -বিশেষণঘটিত অপ্রয়াগ জেনো না হয়।
৫.) কারক,বিভক্তি,সম্বন্ধ ঘটিত ভুল যেন না হয়।
৬.) পুনরুক্তি ঘটিত ভুল এড়িয়ে চলতে হবে।
৭.) বাগধারা ও প্রবচনের সঠিক ব্যবহার হাওয়া চাই।
৮.) সাধু- চলিতের মিশ্রনে ‘গুরুচন্ডালী ‘ দোষ যেন না হয়।
বাক্যের কয়েকটি শুদ্ধ প্রয়োগ :-
অশুদ্ধ -আমি বাড়ি যেতে যেতে হোঁচট খাইয়া পড়িয়া গেলাম।
শুদ্ধ – আমি বাড়ি যেতে যেতে হোঁচট খেয়ে পরে গেলাম।
অশুদ্ধ -রাত্রি অবসান হলো।
শুদ্ধ – রাত্রির অবসান হলো।
অশুদ্ধ – সে আকণ্ঠ পর্যন্ত ঋণে আবদ্ধ।
শুদ্ধ – সে আকণ্ঠ ঋণে আবদ্ধ।
অশুদ্ধ -ভাঁড়ে মা দূর্গা।
শুদ্ধ – ভাঁড়ে মা ভবানী ।
অশুদ্ধ – ভয়ে গা টনটন করচে।
শুদ্ধ – ভয়ে গা ছমছম করছে।
অশুদ্ধ – তিনি শোক-সাগরে দগ্ধ হয়েছেন।
শুদ্ধ – তিনি শোকানলে দগ্ধ হয়েছেন।