“প্রথম প্রণব ভাত আজ খাবে “এই উদাহরণটিতে কয়েকটি শব্দ সহযোগে বাক্য গঠন করা হয়েছে। আলাদা আলাদা অর্থ থাকলেও বাক্যটি কোনো অর্থ প্রকাশ করছে না। না করার কারণ , শব্দ অর্থাৎ পদ গুলি সুসজ্জিত নয়। এগুলি দিয়ে কোনো সার্থক বাক্য গঠন হয়নি।
কিন্তু ওই পদ গুলি সাজিয়ে আমরা যদি বালি – আজ প্রণব প্রথম ভাত খাবে ,তাহলে বাক্যটি একটি অর্থকে সুস্পষ্ট প্রকাশ করছে। এটিকে সার্থক বাক্য বলতে পারি।
যে কয়েকটি সুসজ্জিত পদের দ্বারা মানের কোনো একটি ভাব সম্পূর্ণ রূপে প্রকাশ করা যায় ,তাদের সমষ্টি কে বাক্য বলে। যেমন – আলো মানের মাঝে আসা জাগায়। আকাশ আমাদের উদার হতে শিক্ষা দেয়। অন্ধকার জাগায় ভীতি ।
বাক্যে ব্যবহৃত পদগুলির তিনটি বৈশিষ্ট থাকা চাই – ১.) আসত্তি (নৈকট্য), ২.) যোগ্যতা ও ৩.)আকাঙ্ক্ষা ।
১.) আসত্তি (নৈকট্য) :- বাক্যের বিভিন্ন অংশ যথাযথ স্থানে সন্নিবিষ্ট করার নাম আসত্তি। সিদ্ধার্থের পড়লো কোলে চিন্তারাতো এসে রাজ্হাঁসটি -এটা বাক্য নয়। বাক্যের প্রতিটি পদ উপস্থিত ,কিন্তু বিচ্ছিন্ন ভাবে থাকায় ভাব প্রকাশের অসুবিধা হচ্ছে।বলতে হবে – রাজ্হাঁসটি চিন্তারাতো সিদ্ধারর্থে কোলে এসে পড়লো। সুতরাং বাক্যের বিভিন্ন অংশ যথাযথ স্থানে সাজিয়ে বসানো কে বলে আসত্তি।
২.) যোগ্যতা :- কোনো পদ সমষ্টি উচ্চারিত হবার সঙ্গে সঙ্গে ভাব প্রকাশের যদি কোনো অসঙ্গতি না থাকে ,তবে ওই পদসমষ্টির বাক্য গঠনের যোগ্যতা রয়েছে বুঝতে হবে। “সোনিকা আগুনে সাঁতার দিচ্ছে “।” সূর্য পূর্ব দিকে অস্ত যায় “। -আদৌ এগুলি বাক্য নয়। মানুষের পক্ষে আগুনে সাঁতার দেওয়া অসম্ভব ,আর প্রকৃতির নিয়মে সূর্য ও কখনো পূর্ব দিকে অস্ত যায়না। বলতে হবে “সোনিকা পুকুরে সাঁতার দিচ্ছে” । “সূর্য পূর্ব দিকে উদিত হয় “। এখন ভাব প্রকাশে আর কোনো বাধা রইলো না।
৩.) আকাঙ্ক্ষা :- বাক্যের কিছু অংশ বলবার পর অবশিষ্ট অংশ টুকু বলবার জন্য বক্তার যেমন আগ্রহ থাকে ,না বলা অংশটি শুনবার জন্য শ্রোতারও মনে তেমনি একটি আগ্রহ জন্মে। বাক্যে ব্যবহৃত পদসমষ্টি যদি এই আগ্রহ পরিতৃপ্ত করতে পারে তবেই সেই বাক্যটির আকাঙ্খা আছে বুঝতে হবে। “তোমাদের শ্রেণীর মনীষা “এইটুকু বলে যদি আর কিছু না বালি ,তা হলে অবশিষ্ট অংশ টুকু শুনবার জন্য কি তোমাদের মন ব্যকুল হয়ে উঠবে না ?সেই ব্যাকুলতা দূর করবার
জন্য যখন আমি বললাম “অঙ্কন প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে “এমনি তোমাদের ব্যাকুলতা দূর হলো ,আমার ও আকুলতা মিতে গেলো। বক্তা ও শ্রোতা সকালের আকাঙ্খা মেটাবার ক্ষমতা বাক্যটির আছে। তাই বাক্যটিতে ব্যবহৃত পদগুলি পূর্নাকাঙ্ক্ষ।
গঠন অনুসারে বাক্য চার্ প্রকার – ১.সরল বাক্য ,২.জটিল বাক্য ,৩.যৌগিক বাক্য এবং ৪.মিশ্র বাক্য।
১.) সরল বাক্য :- যে বাক্যে একটি মাত্র উদ্দেশ্য ও একটি মাত্র বিধেয় থাকে ,তাকে সরল বাক্য বলে। যেমন – তনুশ্রী বড়ো হিংসুটে। ফাঁসির মঞ্চ হলো মালঞ্চ। তাদের বাড়িতে সুপ্রিয় এল।
এই উদাহরণ গুলির প্রতিটি বাক্যে একটি মাত্র উদ্দেশ্য আর একটি মাত্র বিধেয় আছে। এজাতীয় বাক্যকে বলে সরল বাক্য। সরল বাক্যে মূল উদ্দেশ্য থাকবে একটি আর মূল বিধেয়ও থাকবে মাত্র একটি। অবশ্য অসমাপিকা ক্রিয়া এক বা একাধিক থাকতে পারে।
২.) জটিল বাক্য :- যে বাক্যেএকটি প্রধান খন্ডবাক্য এবং তার অধীন এক বা একাধিক অপ্রধান খন্ডবাক্য থাকে ,তাকে জটিল বাক্য বলে। প্রধান খন্ড বাক্যে একটি সমাপিকা ক্রিয়া এবং প্রতিটি
অপ্রধান খন্ড বাক্যেও একটি করে সমাপিকা ক্রিয়া থাকবেই। –
ক.) বৃষ্টি থামলো। সূর্য উঁকি দিলো। যখন বৃষ্টি থামলো তখন সূর্য উঁকি দিলো।
খ.) আমরা উপস্থিত হলাম। সে গান বন্ধ করলো। আমরা যেই উপস্থিত হলাম অমনি সে গান বন্ধ করলো।
অপ্রধান খন্ডবাক্য গুলি কোনো সাপেক্ষ সর্বনাম ,নিত্যসম্বন্ধী অব্যয় বা সংশয় সূচক অব্যয় দ্বারা
প্রধান খন্ডবাক্যের সঙ্গে যুক্ত থাকে। এই সংযোগ তিনপ্রকারে সাধিত হয় –
১.) বিশেষ্য ভাবে ,
২.) বিশেষণ ভাবে ,
৩.) ক্রিয়াবিশেসন ভাবে।
১.) বিশেষ্য ভাবে :- অপ্রধান খন্ডবাক্য গুলি বিশেষ্যের মতো ব্যবহৃত হয়ে প্রধান খণ্ডবাক্যের যে কোনো পদের সঙ্গে অন্বীত হয়। যেমন – তুমি যে আসবে না ,আমি জানতাম।
টিভি দেখা যে পড়াশুনার পক্ষে ক্ষতিকর -এ কথা অনেকেই বলেন।
২.) বিশেষণ ভাবে :- অপ্রধান খন্ডবাক্য গুলি বিশেষণের মতো ব্যবহৃত হয়ে প্রধান খণ্ডবাক্যের
অধীন যে কোনো পদকে বিশেষিত করে। যেমন- ‘যে সত্য কথা বলে ,সে শেষ পর্যন্ত জয়ী হয়।
তোমাকে যে অঙ্ক গুলি করতে বলেছিলাম -সেগুলি করেছো।
৩.) ক্রিয়াবিশেসন ভাবে :- অপ্রধান খন্ডবাক্য ক্রিয়াবিশেষণের মতো ব্যবহৃত হয়ে প্রধান খণ্ড বাক্যটির ক্রিয়ার দোষ,গুন্,অবস্থা, স্থান, কাল,হেতু ইত্যাদি প্রকাশ করে। যেমন – এখানে যখনি বৃষ্টি হয় ,মুসল ধরে হয়। যখন রাত্রি নেমে এল তখন ছেলের দল নিঃশব্দে একে একে বাড়ি চোলে গেলো।
৩.) যৌগিক বাক্য :- একাধিক সরল বা জটিল বাক্যের সংযোগে গঠিত বাক্যই যৌগিক বাক্য। যেমন – ছেলেটি বুদ্ধিমান কিন্তু অলস। (দুটি সরল )। ভরতের অশ্রু রামচন্দ্র কে বিচলিত করলো ,কিন্তু পাছে পিতার শর্ত ভঙ্গ হয় এই জন্য তিনি
ভরতের অনুরোধ রাখতে পারলোনা। (একটি সরল ও একটি জটিল )। যৌগিক বাক্যে অন্ততঃ দুটি প্রধান খন্ডবাক্য থাকেই।খন্ডবাক্যগুলি সমুচ্চয়ী অব্যয়ের দ্বারা যুক্ত হয়ে পরস্পর নিরপেক্ষ থাকে।
৪.) মিশ্র বাক্য :- যখন একটি বাক্যে সরল ও জটিল বা জটিল ও জটিল কিংবা জটিল ও যৌগিক এই জাতীয় মিশ্রণ থাকে ,তখন সেই বাক্যটিকে মিশ্র বাক্য বলা যেতে পারে। যেমন – সে পড়াশুনায় ভালো জানতাম কিন্তু সে যে আচার ব্যবহারেও এত ভালো জানতাম না (জটিল ও জটিল )।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর যে কেবলি পন্ডিত ছিলেন তা নয় ,উপরন্তু তিনি সমাজ সংস্কারক ও ছিলেন।
(জটিল ও সরল )।
নিয়মিত ব্যায়াম করবে এবং যদি ভালো সাস্থ চাও তবে তা পাবে। (যৌগিক ও জটিল )।
অর্থানুসারে বাক্যের শ্রেণী বিভাগ :- অর্থানুসারে বাক্যকে সাতটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায় –
১.) নিৰ্দেশাত্বক ,২.) প্রশ্ন সূচক ,৩.) অনুজ্ঞাসূচক ,৪.) প্রার্থনা সূচক,৫.) বিস্ময়াদিবোধক ,৬.) কার্জকরণাত্বক ও ৭.) সন্দেহবোধক।
১.) নিৰ্দেশাত্বক :- যে বাক্যে কোনো কিছু নির্দেশ করা বা অস্বীকার করা হয় তাই নিৰ্দেশাত্বক বা (নির্দেশক ) বাক্য।
নিৰ্দেশাত্বক বা নির্দেশক বাক্যকে আবার দুই প্রকারের -অস্ত্যর্থক (ইতি বাচক ) ,নাস্ত্যর্থক (নেতি বাচক )।
অস্ত্যর্থক (ইতি বাচক ) :- যে বাক্যে কোনো ঘটনা বা বক্তব্যকে নির্দিষ্ট করে বুঝিয়ে দেওয়া হয় অর্থাৎ হ্যাঁ -সূচক উক্তি থাকে সেই বাক্যকে অস্ত্যর্থক বা ইতি বাচক বাক্য বলে। যেমন-
‘দশ টাকা মধ্যবিত্ত গৃহস্থের পক্ষ্যে অনেক।
নাস্ত্যর্থক(নেতি বাচক)=যে বাক্যে ঘটনা বা ভাবের অস্তিত্ব স্বীকার করা হয় ,সেই বাক্যকে নাস্ত্যর্থক বা নেতি বাচক বলে। যেমন-‘এ শোকের সান্তনা হত্যা নয় ‘।
২.) প্রশ্ন সূচক :- যে বাক্যে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা বোঝায় তাই প্রশ্ন বাচক বা প্রশ্ন সূচক বাক্য। যেমন-
সুখ কি বাইরে খোঁজবার জিনিস ?
পরোপকার কি মহৎ কর্ম নয় ?
৩.) অনুজ্ঞাসূচক :- যে বাক্যে আদেশ উপদেশ অনুরোধ উপরোধ ইত্যাদি বোঝায় তাকে
অনুজ্ঞাসূচক বাক্য বলে। যেমন- এমন কাজ আর কখনো করোনা। ভাই, আমাকে একটু সাহায্য কারো।
৪.) প্রার্থনা সূচক :- যে বাক্যে বক্তা কোনো কিছু প্রার্থনা বা ইচ্ছা প্রকাশ করে তাকে প্রার্থনা সূচক বা ইচ্ছা বাচক বাক্য বলে। যেমন – মহাদেব তোমার মঙ্গল করুন। বাবা,আমায় মানুষ কারো।
৫.) বিস্ময়াদিবোধক :- যে বাক্যে আনন্দ,বিস্ময়,উৎসাহ ,ঘৃণা, ক্রোধ,ভয় প্রভৃতি মানের ভাব প্রকাশ পায় তাকে বিস্ময়াদিবোধকবা আবেগ বাচক বাক্য বলে। যেমন – “শাবাশ শাবাশ “তোরা বাঙালির মেয়ে। ” ইশ “সাধ করে আবার নাম রাখা হয়েছে মহেশ।
৬.) কার্জকরণাত্বক :- যে বাক্যে কার্যের কোনো কারণ বা শর্তের উল্লেখ থাকে তাকে কার্জকরণাত্বক বা শর্ত সাপেক্ষ্য বাক্য বলে। যেমন –
যদি আপনি একবারটি আসেন ,তাহলে আমাদের আনন্দ ষোলকলায় পূর্ণ হয়।
ধান বিক্রির টাকাটা আসে গেলে চাঁদা দেব।
৭.) সন্দেহবোধক :- বুঝি ,বোধহয় ,হয়তো প্রভৃতির প্রয়োগে বক্তার সন্দেহ বা অনুমান প্রকাশ পেলে বাক্যটিকে সন্দেহবোধক বা সন্দেহ বাচক বাক্য বলা হয়। যেমন-
“যদি কোথাও শান্তি থাকে তা অদ্বেষে “।
“এই বাঙালি বাবুটির মাথায় নিশ্চই দোষ আছে।
বাক্য পরিবর্তন বা বাক্যান্তিকরন :- বাক্য পরিবর্তন বা বাক্যান্তিকরন কথাটির অর্থ -অর্থ অটুট রেখে বাক্যের রূপান্তর করা। সরল, জটিল,যৌগিক -যে কোনো ধরনের বাক্যকে অন্য ধরনের বাক্যে রূপান্তর করা যায় ,অবশ্য প্রদত্ত বাক্যটিতে পরিবর্তন যোগ্য উপাদান থাকা চাই। আবার,অস্তর্থক,নাস্তর্থক,প্রশ্নসূচক ,অনুজ্ঞা সূচক, প্রার্থনা সূচক,বিস্ময়াদিবোধক,কার্জকরণাত্বক এবংসন্দেহবোধক – যেকোনো এক ধরনের বাক্যকে অন্য ধরনের বাক্যে রূপান্তরিত করাও যায়। তবে মূলবাক্যটির ভাষারীতি (সাধু বা চলিত )
পরিবর্তিত বাক্যটিতেও অক্ষুন্ন রাখতে হবে।
সরল থেকে জটিল বা যৌগিক :-
ক) সরল বাক্যের অন্তর্গত কোনো পদ বা পদসমষ্টিকে সম্প্রসারিত করে একটি অপ্রধান খন্ড বাক্যে রূপান্তরিত করলে জটিল বাক্য পাওয়া যায়। (খ ) প্রদত্ত সরল বাক্যটির অন্তর্গত কোনো পদ বা পদসমষ্টিকে সম্প্রসারিত করে একটি নিরপেক্ষ খন্ড বাক্যে রূপান্তরিত করলে বাক্যটি যৌগিক বাক্যে পরিণত হয়। যেমন –
উন্নতি করতে হলে পরিশ্রমী হও (সরল)। যদি উন্নতি করতে চাও ,তবে পরিশ্রমী হও (জটিল) ।
পরিশ্রমী হও ,তবেই উন্নতি করবে (যৌগিক)।
অসুস্থতার জন্য গতকাল অনুপস্থিত ছিলাম (সরল) । যেহেতু অসুস্থ ছিলাম ,সেহেতু গতকাল অনুপস্থিত ছিলাম (জটিল) । অসুস্থ ছিলাম ,সেইজন্য গতকাল অনুপস্থিত ছিলাম (যৌগিক) ।
তুমি না গেলে আমিও যাবোনা (সরল) । তুমি যদি না যাও,আমিও যাবোনা (জটিল) ।
তুমি যাও (চল),নচেৎ আমিও যাবোনা (যৌগিক)।
জটিল থেকে সরল বা যৌগিক :-
(ক) জটিল বাক্যের অন্তর্গত বিশেষ্যস্থানীয় ,বিশেষণস্থানিও ,বা ক্রিয়াবিশেষণ -স্থানীয় অপ্রধান খন্ড বাক্যকে সংকুচিত করে একটি মাত্র পদে বা পদসমষ্টিতে পরিণত করলে সরল বাক্য পাবে।
(খ) জটিল বাক্যের অন্তর্গত অপ্রধান খন্ড বাক্যকে নিরপেক্ষ্য খণ্ডবাক্যে পরিণত করলে যৌগিক বাক্য পাওয়া যায়। যেমন –
যখনই স্কুলে পৌঁছেছি ,তখনই বৃষ্টি আরম্ভ হয়েছে (জটিল) । স্কুলে পৌঁছানো মাত্র বৃষ্টি আরম্ভ হয়েছে (সরল) । স্কুলে পৌঁছেছি ,আর বৃষ্টিও আরম্ভ হয়েছে (যৌগিক) ।
অপরাধ যখন করেছো,তখন শাস্তি তো পাবেই (জটিল) । অপরাধী বলে শাস্তি পাবেই (সরল) ।
অপরাধ করেছো,অতএব শাস্তি পাবেই (যৌগিক) ।
যদি মন দিয়ে পড়াশুনা করো,তবেই পরীক্ষায় পাস্ করবে (জটিল) । মন দিয়ে পড়াশুনা করলেই পরীক্ষায় পাস্ করবে (সরল) । মন দিয়ে পড়াশুনা কর ,তবেই পরীক্ষায় পাস্ করবে (যৌগিক) ।
যৌগিক থেকে সরল ও জটিল :-
(ক) যৌগিক বাক্যের অন্তর্গত একটি নিরপেক্ষ খন্ড বাক্যকে অটুট রেখে অন্য নিরপেক্ষ খন্ড বাক্যকে সংকুচিত করে পদ বা পদসমষ্টিতে পরিণত করো । সংযোজক অব্যয়গুলি তুলে নিলে
বাক্যে একটিমাত্র সমাপিকা ক্রিয়া থাকে । নবগঠিত বাক্যটি হবে সরল বাক্য ।
(খ) যৌগিক বাক্যের নিরপেক্ষ খন্ডবাক্যগুলির মধ্যে একটিকে অটুট রেখে অন্য খন্ডবাক্যগুলিকে বিশেষ্যস্থানীয় ,বিশেষণস্থানিও ,বা ক্রিয়াবিশেষণ – স্থানীয় অপ্রধান খন্ডবাক্যে রূপান্তরিত করলে জটিল বাক্য পাওয়া যায়। যেমন –
“আমাকে রক্ত দাও ,আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব ” (যৌগিক) । আমাকে রক্ত দিলে আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব (সরল) । যদি আমাকে রক্ত দাও ,তবে আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব (জটিল) । কিছু টাকা পেলাম, কিন্তু তাতেও অভাব মিটলো না (যৌগিক) । কিছু টাকা পাওয়া সত্ত্বেও অভাব মিটলো না (সরল) । যদিও কিছু টাকা পেলাম,তবুও অভাব মিটলো না (জটিল) ।
স্বামীজী পরম দেশপ্রেমিক, একথা সবাই মুক্ত কন্ঠে স্বীকার করেন (যৌগিক) । স্বামীজীর পরম দেশপ্রেমের কথা সবাই মুক্ত কন্ঠে স্বীকার করেন (সরল) । স্বামীজী যে পরম দেশপ্রেমিক , একথা সবাই মুক্ত কন্ঠে স্বীকার করেন (জটিল) ।
অর্থের গঠন ভঙ্গিতে বাক্য পরিবর্তন :-
১.) অস্তর্থক :- জননী আর জন্মভূমিকে সবাই ভালোবাসে।
নাস্ত্যর্থক :- এমন কেউ নেই যে জননী আর জন্মভূমিকে ভালোবাসে না।
প্রশ্নাত্মক :- জননী আর জন্মভূমিকে কে না ভালোবাসে ?
২.) প্রশ্নাত্মক :- এ অত্যাচার কোনো মানুষ সইতে পারে ?
নিৰ্দেশাত্বক :- এ অত্যাচার কোনো মানুষ সইতে পারে না।
৩.) বিস্ময়াদিসূচক :- কী মিষ্টি গলা।
নিৰ্দেশাত্বক :- গলাটি বড়োই মিষ্টি।
৪.) নিৰ্দেশাত্বক :- ভুল গুলি তোমাদের এখনই সংশোধন করতে বলেছি।
অনুজ্ঞাসূচক :- ভুল গুলি তোমরা এখনই সংশোধন কর।
৫.) প্রশ্নাত্মক :- প্রতিভা কি শিক্ষা নিরপেক্ষ ?
নিৰ্দেশাত্বক :- প্রতিভা শিক্ষা সাপেক্ষ।
৬.) প্রত্যক্ষ উক্তি :- রাজা ভাগ্নেকে বললেন ,”একবার পাখিটাকে আনো তো, দেখি “।
পরোক্ষ উক্তি :- রাজা পাখিটাকে একবার দেখবেন বলে ভাগ্নেকে আনতে বললেন।
৭.) ইতি বাচক :- ভাগ্যে এসব নমুনা সবসময় চোখে পরে।
নেতি বাচক :- ভাগ্যে এসব নমুনা সবসময় চোখে পরেনা।