NIOS Class 12 Bengali Chapter 3 Solution – পদ্মাবতীর বিবাহমঙ্গল
NIOS Class 12 Bengali Solution Chapter 3 পদ্মাবতীর বিবাহমঙ্গল. NIOS Class 12 Bengali Chapter 3 Question Answers Download PDF. NIOS Class 12 Bengali Notes.
Board |
NIOS |
Class |
12th (Higher Secondary) |
Subject |
Bengali |
Topic |
Question Answer, Solution, Notes |
পাঠগত প্রশ্ন ৩.১
১) নিজের শব্দগুলির মধ্যে থেকে সঠিক শব্দটি খুঁজে নিয়ে শূন্যস্থানে বসান।
বিচিত্র বসনপরি নানা আভরণ।
করেত লইলা রামা নির্মল দর্পণ।।
নিজ আখি নিজ রুপ দেখি সুশোভন।
আপনার রূপ হেরি মজিল আপন।।
২) নানা যত্র বাহে কথাটির অর্থ কি?
উঃ নানা রকম যন্ত্র বাজায়।
৩)” কেহ কেহ সুস্বরে মঙ্গল গীত গাহে।” মঙ্গল গীত কথাটির ঠিক উত্তরের টিক চিহ্ন দিন:
উঃ বিবাহ অনুষ্ঠানে দেবতার কাছে কল্যাণ জনক যে প্রার্থনা গীত গাওয়া হয় তাকে মঙ্গল গীত বলা হয়।
৪)ক-৪ হইল তন্দ্রিত
খ-৩ মন সচকিত
গ-২ স্বপ্ন সমসর
ঘ-১ হইল গোচর
৫) “হরিষে পুলক অঙ্গ “কিসের হরিষ ?ঠিক উত্তরে টিক চিহ্ন দাও।
উঃ দর্পণে রত্ন সেনের মুখ দেখছে বলে হরিষ বা আনন্দ।
৬) নৃপ গলে দিতে কন্যা মাগে বর মালা।
ক) কন্যাটি কে? উঃ পদ্মাবতী।
খ) কার সঙ্গে তার বিবাহ অনুষ্ঠান হতে চলেছে?
উঃ চিতোর রাজের সঙ্গে।
গ) সে বর মালা চেয়েছে কার কাছে?
উঃ সখিদের কাছে।
৭) কি দেখে পদ্মাবতীর অঙ্গ কেন পুলকিত হল?
উঃ বিবাহ সম্বন্ধে প্রত্যেকটি নারী তার জীবনে এক আলাদা কৌতুহলময় কল্পনার রাজ্য তৈরি করে মনে মনে। সিংহল কন্যা এর বিরূপ নয়। চিতোর রাজ রত্ন সেনের সাথে তার বিবাহ স্থির হয়। বিবাহকালে চারিদিকের পরিবেশ ও সাজসজ্জা এক আনন্দময় পরিস্থিতির আভাস আনছে। পদ্মাবতী রত্ন সেনের চিন্তায় বিভোর হয়ে নিজেকে তার সাথে একাত্ম করে ফেলেছেন। বিবাহ নিয়ম সূত্রে রাখা হাতের দর্পনে সে নিজের মুখ দেখতে গিয়ে যেন প্রিয় রত্ন সেনকে দেখতে পাচ্ছেন আর সে কারণেই তিনি পুলকিত।
পাঠগত প্রশ্ন ৩.২
১) সঠিক উত্তরের টিক চিহ্ন দিন
ক) পদ্মাবতী রাজার গলায় কখন বর মালা দিতে চেয়েছেন-
উঃ দর্পণে নিজের রূপের মধ্যে স্বামীরত্ন সেনের মুখ দেখতে পেয়ে পদ্মাবতী তার গলায় পরিয়ে দেবার জন্য বরমালা চেয়েছেন।
খ) সখিরা পদ্মাবতীকে উপহাস করলেন কেন?
উঃ রাজা দূরে বিবাহ সভায় থাকা সত্ত্বেও অন্তঃপুরে বসে পদ্মাবতী বরমাল্য চেয়েছেন বলে।
২) এমত না করো যদি মোর দিব্য লাগে
ক) কে কাকে বলেছে?
উঃ সখিরা পদ্মাবতী কে বলেছে।
খ) দিব্য দেবার কারণ কি?
উঃ বিবাহের সময় পদ্মাবতী যেন এরূপ অদ্ভুত আচরণ না করেন তার জন্য তারা দিব্য দিচ্ছে।
পাঠগত প্রশ্ন ৩.২
১) সঠিক উত্তরের টিক চিহ্ন দিন
ক) পদ্মাবতী রাজার গলায় কখন বর মালা দিতে চেয়েছেন-
উঃ দর্পণে নিজের রূপের মধ্যে স্বামীরত্ন সেনের মুখ দেখতে পেয়ে পদ্মাবতী তার গলায় পরিয়ে দেবার জন্য বরমালা চেয়েছেন।
খ) সখিরা পদ্মাবতীকে উপহাস করলেন কেন?
উঃ রাজা দূরে বিবাহ সভায় থাকা সত্ত্বেও অন্তঃপুরে বসে পদ্মাবতী বরমাল্য চেয়েছেন বলে।
২) এমত না করো যদি মোর দিব্য লাগে
ক) কে কাকে বলেছে?
উঃ সখিরা পদ্মাবতী কে বলেছে।
খ) দিব্য দেবার কারণ কি?
উঃ বিবাহের সময় পদ্মাবতী যেন এরূপ অদ্ভুত আচরণ না করেন তার জন্য তারা দিব্য দিচ্ছে।
৩) সারি সাজাও:
আপনার রূপ দেখি-৩ হইলা এমন।
প্রিয়তম রুপ হেরি-১ করিবা কেমন।
আনস্থানে মাগো বরমালা-৪ নিজ গলে।
এমত করিবা নাকি-২ বিবাহের স্থলে ।
৪)অন্তঃপুরে থেকে পদ্মাবতী কেন বরমাল্য চাইলেন তা তিনটি বাক্যে উত্তর দিন।
উঃ চিতোর রাজ রত্ন সেনের সঙ্গে বিবাহ স্থির হয় সিংহল রাজ গান্ধর্ব সেনের কন্যা পদ্মাবতীর। প্রত্যেক নারী মন বিবাহের পূর্ব মুহূর্তে প্রিয় স্বামীর সম্বন্ধে যে চিন্তা ধারণা ও কল্পনার রাজ্য প্রস্তুত করেন রানী পদ্মাবতীও অনুরূপভাবে নিজের মননে তার প্রতিচ্ছবি সযত্নে অঙ্কিত করেছিলেন। বিবাহের অপরূপ সাজে সজ্জিত হয়ে দর্পণ সম্মুখে নিজেকে দেখে তিনি আত্মবির্ভর ও বিমোহিত হয়ে পড়েন। আপনার অঙ্গে তিনি একই সাথে নিজের এবং রাজা রত্ন সেনের মুখ দেখতে পাচ্ছেন। কল্পনার রাজ্যে অচেতন এবং সচেতন মন মিলে মিশে একাকার হয়ে গেছে। সেখানে তিনি আলাদা করে প্রিয় রত্ন সেনের কথা ভাবতে পারছেন না। কল্পনার রাজ্যে পাড়ি দিয়ে তিনি অবচেতন মননে পৌঁছে গেছেন বিবাহ মণ্ডপে । সে কারণেই অন্তঃপুরে থেকেই তিনি বরমালা চাইছেন রাজার গলায় পরানোর জন্য।
খ) প্রভু বিবাহ স্থলে থাকলেও পদ্মাবতী অন্তঃপুরে থেকে কিভাবে তার দর্শন পান অনধিক তিনটি বাক্যে উত্তর দিন।
উঃ পদ্মাবতী আর রত্ন সেন যেন অভিন্ন দুটি হৃদয়। বিবাহের পূর্বে রত্ন সেনের চিন্তায় রানী পদ্মাবতী এতটাই বিমোহিত যে সর্বত্রই তিনি তার ভাবী স্বামী
রত্ন সেনের মুখ দেখতে পারছেন। পদ্মাবতী নিজেকে রত্ন সেনের সাথে এতটাই একাত্ম করে ফেলেছেন যে দর্পণে নিজের রূপ দেখে মুগ্ধ হয়ে পড়েন এ কথা ভেবে যে তিনি দর্পনে রত্নসেনকেই দেখছেন। অন্তঃপুরে শ্রবণযোগ্য দর্শনযোগ্য প্রতিটি বস্তুর মধ্যেই তিনি তার প্রিয় রত্ন সেনের প্রতিচ্ছবি দেখতে পাচ্ছেন। ভাবের সাগরে বিলীন হয়ে হৃদয় অন্তরে যে রসধারার সঞ্চার ঘটেছে তাকে আশ্রয় করে তিনি বিবাহ মণ্ডপে না থেকেও অন্তঃপুরেই অন্তরদৃষ্টি দিয়ে রত্ন সেনকে দেখতে পারছেন।
পাঠ গত প্রশ্ন:৩.৩
১)ঠিক উত্তরের টিক চিহ্ন দিন:
ক) সম্ভ্রমিতা লজ্জা যুক্তা পদুত্তর দিলা ।লজ্জাযুক্তা এখানে কাকে বলা হয়েছে? পদ্মাবতী কে।
খ) তুমি সবে নাহি জানো ভাব রস তত ।ভাব রস কি? ভাব রস হল প্রেমের গভীর ভাব।
গ) এবে সত্য কহি সত্যটা কি? পদ্মাবতীর স্বামী তার হৃদয় কমলের সর্বদা বিরাজ করছেন।
ঘ) পদ্মাবতীর সখিরা পদ্মাবতীর হৃদয় বার্তা বুঝতে পারেনি কেন? সখিরা পদ্মাবতীর ভাবের ভাবিনি নয় বলে।
ঙ )সখীদের সঙ্গে কথোপকথনে পদ্মাবতী সখীদের কি বুঝিয়েছেন? তিনি সখীদের বুঝিয়েছেন স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কোন ভিন্নতা নেই ।তারা এক অভিন্ন এক দেহে লীন হয়ে থাকেন।
চ) পদ্মাবতীর বিবাহ মঙ্গল কবিতাটির মূল বিষয় কি? সুন্দর একটি রোমান্টিক প্রেম কাব্যের উপাখ্যান।
৩.৪) পাঠ গত প্রশ্ন:
১)ক) এতেক কহিতে শুভক্ষণ উপস্থিত-এতে কহিতে বলতে কাদের মধ্যে কথা হচ্ছিল?
উঃ সিংহল রাজকন্যার সঙ্গে তার সখীদের
খ) মহারানী কি আজ্ঞা দিয়েছিলেন?
উঃ মহারানী পদ্মাবতীকে তাড়াতাড়ি বিবাহস্থলে নিয়ে যেতে আদেশ দিয়েছিলেন।
গ) পদ্মাবতী কোন বাহনে বিবাহ সভায় যাত্রা করলেন?
উঃ পদ্মাবতী রত্নময় চতুর্দলায় চড়ে বিবাহ সভায় যাত্রা করলেন।
ঘ) রাজপুরী হুলস্থুল হল কেন?
উঃগীতে নাট্যে বাদ্যে রাজপুরী হুলস্থুল হল
ঙ) বিবাহস্থলে যাবার পূর্বে পদ্মাবতীর মন উদ্বিগ্ন হল কেন?
উঃ জয়ধ্বনিতে স্থান ভরে ওঠায় পদ্মাবতীর মন উদ্বিগ্ন হলো।
২)ক) কন্যা ‘চলিতে না চলে’ কেন?
উঃ উপরিউক্ত অংশটি সৈয়দ আলাওলের লেখা ‘পদ্মাবতীর বিবাহ মঙ্গল’ কবিতা থেকে সংগৃহীত হয়েছে। অংশটিতে রানী পদ্মাবতী কে ইঙ্গিত করা হয়েছে। চিতোর রাজ রত্ন সেনের সাথে সিংহল রাজ গান্ধর্ব্য সেনের কন্যা পদ্মাবতীর বিবাহ স্থির হয় । উক্ত দিনে গোটা রাজ্যে আনন্দময় পরিবেশের সূচনা হয়। পদ্মাবতী রত্ন সেনকে নিজের মননে এমনভাবে স্থান দিয়েছেন যে ,এখন যেন তাদের চিন্তা ভাবনার মধ্যে কোন মূলগত পার্থক্য নেই। তারা একে অপরের অভিন্ন হয়ে উঠেছেন। বিবাহ বাসরের শুভ মুহূর্তের কথা চিন্তা করে রানী বিভোর হয়ে আছেন। আত্মমগ্ন হয়ে আছেন নিজের কল্পনার রাজ্যে। তিনি অপেক্ষারত সেই চরম মুহূর্তের জন্য। আর যখন সেই প্রতীক্ষিত সময় দ্বারে এসে উপস্থিত, রত্নময় চতুর্দলা এসে পৌঁছল অন্তঃপুরে। চারিদিকের পরিবেশ হয়ে উঠলো পরিপূর্ণ। গীতে নাট্যে, জয় জয় ধ্বনিতে ভরে গেল গোটা অন্তঃপুর ।লজ্জায় জর্জরিত রানী পদ্মাবতী তখন পা ফেলে চলতে পারছেন না। তার পা যেন অর্ধগতি লাভ করেছে। হৃদয়ের সাথে সাথে পা ও যেন কল্পনার রাজ্যে বিচরণ করতে করতে অবচেতন হয়ে পড়েছে।
পাঠান্ত প্রশ্ন:৩.৬
১) “কেহ কেহ সুস্বরে মঙ্গল গীত গাহে।” কারা কোথায় মঙ্গল গীত গাইছিল? সেখানে মঙ্গল গীত গাওয়া হচ্ছিল কেন? অনধিক পাঁচটি বাক্যে উত্তর দিন।
উঃ উপরিউক্ত পংক্তিটি সংগৃহীত করা হয়েছে কবি আলাওলের লেখা পদ্মাবতীর বিবাহ মঙ্গল কাব্যাংশ থেকে। সিংহর রাজ গান্ধর্ব্য সেনের কন্যা পদ্মাবতীর শহীদ চিতোরের রাজা রত্ন সেনের বিবাহ সভায় রাণী পদ্মাবতীর সখিরা একসাথে মিলে মঙ্গল গীত গাইছিল।
রাজা রত্ন সেন এবং রানী পদ্মাবতী বিবাহ সূত্রে আবদ্ধ হতে চলেছেন। বিবাহ সনাতন ধর্মের প্রথা, যে অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ভালোবাসা অটুট হয়। নিজেদের মধ্যে সমদৃষ্টির চিন্তাভাবনা এবং ধ্যান ধারণা গড়ে ওঠে। এক এবং অভিন্ন আত্মায় একে অপরের সাথে সংযুক্ত হয়। বিবাহ অনুষ্ঠানে দেবতার কাছে কল্যাণ জনক প্রার্থনা গীত দেওয়া হত সে যুগে তাকেই মঙ্গল গীত বলা হয় । পদ্মাবতীর সখীগন পদ্মাবতীর বিবাহ কালে মঙ্গল কামনায় ব্রতী হয়ে ভগবানকে উৎসর্গ করে তার উদ্দেশ্যে এই মঙ্গল গীত গাইছিলেন।
২) পদ্মাবতী কোথায় বসে কার গলায় কখন বরমালা দিতে চেয়েছেন? আর যাকে বরমালা দিতে চেয়েছেন তিনি বা তখন কোথায় ছিলেন তা অনধিক আটটি বাক্যে উত্তর দিন।
উঃ বিবাহ লগ্নের সময় যখন ক্রমশ আসীন তখন রানী পদ্মাবতীর মনে অসম্ভব উৎকণ্ঠার জন্ম হয়। রাজসজ্জায় সজ্জিত রাজকন্যা নিজেকে অপরূপ সৌন্দর্যে যখন দর্পণে দেখলেন নিজের রূপ দেখে আত্মবিমোহিত হয়ে গেলেন। তার সঙ্গে চারিদিকের পরিবেশ তার কল্পনার শক্তির পালে বাতাস প্রদান করছিল। এ যেন এক অলৌকিক সুখ যা দেখছেন শুনছেন সবকিছুর মধ্যেই প্রিয় মানুষের মুখ ভেসে উঠছে ।সামান্য টুকু সময় বিলম্ব ব্যবধান তার সইছে না বিবাহ সভায় উপস্থিত না হয়ে অন্তঃপুরে বসে থাকা অবস্থায় সে চিতোর রাজরত্ন সেনের গলায় বরমাল্য দিতে উদগ্রীব হয়ে উঠেছে।
অথচ রাজা রত্ন সেন তখন বিবাহ সভায় উপস্থিত ছিলেন আর রানী পদ্মাবতী ছিলেন অন্তঃপুরে।
৩)আপনার রুপ দেখি হইলা এমন।
প্রিয়তম রুপ হেরি করিবা কেমন ।।
কার প্রতি কাদের উক্তি? এই উক্তির তাৎপর্য কি?
উঃ উপরিউক্ত অংশটি সংগ্রহ করা হয়েছে কবি আলাওলের লেখা ‘পদ্মাবতীর বিবাহ মঙ্গল’ কাব্যাংশ থেকে। অংশটিতে সিংহল রাজ গান্ধর্ব্য সেনের কন্যা পদ্মাবতীর প্রতি তার সখিগণ এই উক্তি করেছেন।
পদ্মাবতীর বিবাহ স্থির হয় চিতোর রাজ রত্ন সেনের সাথে। বিবাহকালে বিবাহ সভায় উপস্থিত হওয়ার পূর্বে অন্তঃপুরে রানী পদ্মাবতী বিবাহসজ্জায় সজ্জিত হয়ে দর্পণে নিজের মুখ দেখে বিভোর হয়ে যান। তিনি সেখানেই যেন তার প্রাণপ্রিয় হবু স্বামী রত্ন সেনকে দেখতে পান। রানী পদ্মাবতীর আচরণে অসংগতি দেখা যায় বারবার। তিনি নিজেকে রত্নসেনের থেকে আলাদা ভাবে ভাবতে পারছেন না। যেন দুজনেই একাত্ম হয়ে উঠেছেন। কখনো তিনি নিজের মুখ দেখে আত্মমগ্ন হয়ে পড়ছেন। আবার কখনো বা অন্তঃপুরে থেকেই তিনি রাজার গলায় বরমাল্য দেওয়ার জন্য সখীদের কাছ থেকে বরমালা চাইছেন। আর ঠিক সেই সময় সখিরা এমন উক্তি করেছেন যে তিনি যদি অন্তঃপুরে থেকে এরকম আচরণ করেন তাহলে বিবাহ সময়ে যখন সত্যি সত্যি রত্ন সেনের দেখা পাবেন তখন তিনি কিরূপ আচরণ করবেন।
৪)’যেই স্বামী সেই আমি ‘কথাটার তাৎপর্য কি?
উঃ উপরিউক্ত অংশটি কবি আলাওলের লেখা ‘পদ্মাবতীর বিবাহ মঙ্গল ‘কাব্যাংশ থেকে সংগৃহীত করা হয়েছে।
উক্তিটি খুব সামান্য কিছু শব্দ দ্বারা ব্যক্ত হলেও এর অর্থের গভীরতা প্রবল। সনাতন ধর্ম অনুযায়ী বিবাহ সম্পন্ন হয় বিশেষ কিছু রীতি এবং নিয়ম পালনের মধ্য দিয়ে। বিশ্বাস করা হয় বিবাহের পরবর্তীতে স্বামী এবং স্ত্রীর মধ্যে চিন্তাভাবনার কোন মূলগত পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় না ।তারা একে অপরের সাথে একাত্ম ভাবে বিলীন থাকেন। তাদের মধ্যে শ্রদ্ধা প্রেম ভালবাসার এক অসাধারণ সংমিশ্রণ তৈরি হয়। দুটি ভিন্ন শরীরের ব্যক্তি হলেও তাদের মধ্যে সমদৃষ্টির ব্যাপ্তি পরিলক্ষিত। ব্যবধান ঘুচে গিয়ে তারা এক এবং অভিন্ন হয়ে ওঠেন। এক্ষেত্রে রানী পদ্মাবতী আর রাজা রত্ন সেন ভিন্ন নয়। এরূপ চিন্তা ভাবনাকে প্রকাশ করবার জন্যই রানী পদ্মাবতী উপরিউক্ত উক্তিটি রেখেছেন।
৫) ‘সম্ভ্রমিতা লজ্জাযুক্তা পদুত্তর দিল’।-সম্ভ্রমিতা লজ্জাযুক্তা কাদের কি কথার প্রত্যুত্তর দিলেন?
তিনি প্রত্যুত্তর কিভাবে দিলেন?
উঃ সম্ভ্রমিতা লজ্জা যুক্তা তার সখীদের প্রত্যুত্তর দিলেন।
বিবাহস্থলে পৌঁছানোর পূর্বেই রাণী পদ্মাবতী তার হবু স্বামী রত্ন সেনের চিন্তায় বিভোর হয়ে যে রূপ আচরণ করছেন তা দৃষ্টিপাত করে তার সখীগণ লজ্জা বোধ করছেন। তারা বলছে অন্তঃপুরে থেকেই পদ্মাবতীর যদি এমন অবস্থা হয় তাহলে বিবাহ সবাই যখন স্বামীর মুখ দেখবেন তখন তার কি অবস্থা হবে। তার এই অদ্ভুত আচরণ এর প্রতি তারা পদ্মাবতী কে নিয়ে উপহাস করেছেন খানিক। সাথে এও বলেছেন বিবাহের সময় তিনি যদি এমন করেন তবে মুখ থেকে পঞ্চরত্ন মুছে ফেলা হবে।
সুখীদের এরূপ উপহাসের পাত্রী হয়ে পদ্মাবতী যথেষ্ট লজ্জা পেয়েছেন। তার সাথে তার মনের যে অস্থির অবস্থা তার খানিকটা প্রকাশক পেয়েছে তার কথায়। পদ্মাবতী বলেছেন যে তার সখিরা যদি তার মনের অবস্থা বুঝতো এবং তার সাথে সমব্যথী ও সমভাবাবি হত তাহলে তারা তাকে আর উপহাস করত না। কারণ রত্ন সেন এখন পদ্মাবতীর সাথে একাত্ম হয়ে গেছে আর তাই চোখ মুদলেই হৃদয় কমলে রত্ন সেনের মুখ ভেসে ওঠে। তিনি রত্নসেন কে হৃদয় কমলে স্থান দিয়েছেন। একথা সখিরা জানে না তাই তারা তার সাথে এরূপ আচরণ করছে।
৯)’ বিবাহ সজ্জায় অন্তঃপুরে থেকে এক মধুর ভাবে আচ্ছন্ন হয়ে পদ্মাবতী এক অদ্ভুত কান্ড করলেন’।
ক) মধুর ভাবে আচ্ছন্ন বলতে কী বলা হয়েছে?
খ) কি কাণ্ড করলেন ?
গ) কাণ্ডটি অদ্ভুত কেন?
ঘ) তাহলে কি পদ্মাবতীর আত্মবিস্মৃতি ঘটেছে বলে মনে করেন?
উঃ উপরিউক্ত অংশটি সংগ্রহ করা হয়েছে কবি আলাওলের লেখা পদ্মাবতীর বিবাহ মঙ্গল কাব্য থেকে এখানে মধুর ভাবে আচ্ছন্ন বলতে বোঝানো হয়েছে রানী পদ্মাবতীর বিবাহের পূর্বে তার হবু স্বামী রত্ন সেনকে নিয়ে যে কল্পনার জগত রচনা করেছেন মনে মনে এবং সেই জগতে তিনি এতটাই বিমোহিত হয়েছেন যে বাহ্যিক জগতের সাথে তার যোগাযোগ ছিন্ন হয়েছে। বাহ্যিক কোনো সাড়া তাকে উত্তেজনা জাগাতে পারছে না। হৃদয়ে মননে তিনি শুধুমাত্র তাকেই দেখতে পাচ্ছেন।
তিনি ভাবসাগরে এতটাই আকুল এবং বিজড়িত যে ভুলেই গিয়েছেন যে এখনো তিনি অন্তঃপুরেই রয়েছেন। কল্পনার জগতে রাজা রত্ন সেনের প্রতিচ্ছবি দেখতে পেয়ে তার গলায় বর মাল্য প্রদান করার জন্য উদগ্রীব হলেন এবং সখীদের কাছে বরমালা চেয়ে বসলেন।
কান্ডটি অদ্ভুত মনে হয়েছে তার সখীদের কাছে কারণ অন্তঃপুরে থাকা অবস্থায় শুধুমাত্র রত্ন সেনের কথা চিন্তা করেই তার এরূপ আচরণ প্রকাশ পাচ্ছে যখন সত্যিই তিনি রাজা রত্ন সেনের সম্মুখে বর মাল্য দেবেন তখন কি হবে। রানী পদ্মাবতী এখন অন্তঃপুরে আর রাজা বিবাহের স্থলে। শুধুমাত্র রাজার কথা চিন্তা করে রাণী পদ্মাবতীর আচরণে এরূপ অসংলগ্নতা দেখা দিচ্ছে সে কথা ভেবেই সখিরা কান্ডটিকে অদ্ভুত বলে মনে করছেন।
এ ঘটনাকে কখনোই আত্মবিস্মৃতি বলা চলে না। কোন প্রিয় মানুষের কথা যখন কেউ মনে করে। একান্ত ভাবে তাকে চায় তখন সেই ব্যক্তি প্রিয় মানুষকে নিজের সাথে একাত্ম করে ফেলে। নিজের মধ্যেই তাকে খুঁজে পায় ।
এমন কি কখনো কখনো চোখের সামনে তার সজীব উপস্থিতি অনুভব করে। ক্ষণিকের জন্য কল্পনার জগতে নিজেকে উন্মিলিত করে । এর ফলস্বরূপ বাহ্যিক সারা তাকে উত্তেজিত করতে পারে না।
Also See: কাশীরাম দাস Chapter Question Answer